বাংলা বর্ষপঞ্জিতে এখন পৌষ মাস, ইংরেজিতে ডিসেম্বর । দিগন্ত জুড়ে কুয়াশা । আর আকাশ ঢেকে
আছে মেঘে । অনেক দিন থেকেই চলছে এই অবস্থা । অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রির পরীক্ষা শেষ, তাই সারা দেশ জুরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলতে বনভোজনের আমেজ চলছে । অনেকেই নিজ উদ্দ্যগে পরিবার কিংবা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ভ্রমনে আয়জন করে থাকে । 
শুধু বাংলাদেশে নয়, আবহাওয়া অফিসের কম্পিউটারের পর্দায় গত সোমবারে দেখা গেছে, বাংলাদেশের পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিমে ভারত হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত আকাশ মেঘে ভরে আছে ।
এ বছর তাপমাত্রা খুব একটা কমবে না । ২০-২১ ডিসেম্বরের দিকে তাপমাত্রা বর্তমানের পর্যায় থেকে কিছুটা কমতে কমতে পৌষের স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে । কিন্তু মধ্যম মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ জানুয়ারির আগে আশা করা যায় না । অবশ্য জানুয়ারিতে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে । এ বছর শীত এর চেয়ে বেশি না-ও হতে পারে ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) সমর্থনপুষ্ট জাতিসংঘের ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)’ ২০১৫ সাল পৃথিবীর উষ্ণতম বছর হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল । পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ডব্লিউএমওর নির্ধারিত ১২টি জিপিসিতে (গ্লোবাল প্রোডাকশন সেন্টার) সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ওই পূর্বাভাস দেওয়া হয় । তা ফলে যাওয়ার লক্ষণ পৃথিবীর সর্বত্র দেখা যাচ্ছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন ।
বাংলাদেশে তাপমাত্রা এই সময়ের স্বাভাবিকের তুলনায় ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেশি রয়েছে । এর মধ্যে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমান তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৫ ডিগ্রি বেশি । ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে বেশি আছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস । গতকাল দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সাড়ে ১৬ ডিগ্রি । অথচ এ সময়ের স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি ।
নভেম্বর-ডিসেম্বরে এ রকম আবহাওয়া পরিস্থিতি যে এবারই প্রথম হয়েছে, তা নয় । কাজেই এই পরিস্থিতিকে আবহাওয়ার নতুন প্রবণতা বলা যায় না । এখন দুইভাবে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে— আরও তিন-চার দিন এ রকম মেঘ-কুয়াশা অব্যাহত থাকার পরে বৃষ্টি হয়ে মেঘ-কুয়াশা কেটে গিয়ে শীত নামতে পারে । অথবা যেকোনো দিন মেঘ-কুয়াশা কেটে গিয়ে তাপমাত্রা কমার প্রবণতা শুরু হতে পারে ।
বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি দেশের কৃষি ও জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আবহাওয়াবিদদের অভিমত । তাঁরা বলেন, গত নভেম্বর থেকে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকায় কৃষি আবাদ বিঘ্নিত হতে পারে । নানা ধরনের মৌসুমি রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার হারও বাড়তে পারে ।
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা । এ ছাড়া ভাইরাস জনিত জ্বরে ভুগছে মানুষ । যাদের শ্বাসকষ্ট আছে, তারা হঠাৎ গরম-ঠান্ডার কারণে ভুগছে । এ ধরনের রোগীদের ধুলাবালু এড়িয়ে চলতে হবে । হাত ধুতে হবে বারবার, আর হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করতে হবে । বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে এদের কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখা ভালো । 

Popular Posts